শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

প্রিয় তপা দাদা ভালোবেসেই গেলেন পেলেন না কিছুই!

জিটিবি নিউজঃ যুগে যুগে ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত রয়েছে অনেক। তার মধ্যে অন্যতম লাইলি-মজনু, সিরি-ফরহাদ ও চন্ডিদাস-রজকিনি’র ভালোবাসার বাস্তবতা অন্যতম। ভালোবাসা এমন একটা ভাব যা প্রকাশ করতে গিয়ে,করতে না পেরে অনেকেই পরবর্তীতে যাযাবর জীবনে পর্দাপন করেছেন। কথিত রয়েছে এমনই একজন প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের শহরে থাকা তপন কুমার সাহা (৬৮) ওরফে তপা দা।

যিনি নাকি ভালোবাসার টানেই পরিবারের সবাই দেশ ত্যাগ করলোও অন্তরের গহীনে পোষা ভালোবাসা পাওয়ার জন্য প্রিয় শহর বরিশালে থেকে গিয়েছিলেন। মনের কোনে স্থান দেয়া সেই পোষা ময়নার ডাক অন্তর থেকে অন্তরে সাড়া না দিলেও জন্মভূমিকে তার চেয়েও বেশি ভালোবেসে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থেকে গেছেন চিরচেনা শহরেই।

তপা দাদার ভালোবাসার ত্যাগও কিন্তু উল্লেখিত বাস্তব প্রেম কাহিনীর চেয়ে কম নয়। স্বাধীনতার পরে যৌবন বয়সে বরিশালের সদর রোড, হাসপাতাল রোড, লাইন রোড, বাজার রোড, স্ব রোড আর ভাটিখানা তপা দাদার বিচরন থাকলেও তাকে চিনতো পুরো নগরবাসী। ভাটিখানা ষোল বাড়ীর বাসিন্দা তপা দাদা যৌবনকালে দর্জির কাজ করতেন। তার বাবা রঙ্গলাল সাহা ছিলেন মুদি ব্যবসায়ী। ৫ ভাই আর ৪ বোনের মধ্যে তপা দাদা ছিলেন তৃতীয়। বাবা মা, ভাই ও বোনেরা দেশত্যাগী হওয়ার পর তপা দাদা আর সংসারের ব্যাপারে মনোযোগী হয়নি।

শুরু করেন যাযাবর জীবন। বরিশালের চিরচেনা সড়ক গুলোই ছিলো তার ঠিকানা। সারাদিন এক মহল্লা থেকে আরেক মহল্লা ঘুরে মানুষের কাছ থেকে ১০ টাকা করে চেয়ে খাবারের টাকা জোগাড় হলেই দাদা চলে যেতেন কোন এক খাবারের হোটেলে। সকাল ও রাতে এ দুবেলা কখনও খেয়েছেন আবার বেশির ভাগ সময়ই না খেয়ে রাতের আঁধারে কোন এক সড়কের কোনে বা দোকানের কোনায় আশ্রয় নিতেন দাদা।

তপা দাদা (ভালোবাসার তপা পাগলা) এই নগরীর সড়কে সড়কে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অবস্থান করে গত শুক্রবার (২৬ জুন) সকাল প্রায় ৯টার সময় বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে টানা ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে বিচিত্র এ ভূবন ছেড়ে চলে যান,না ফেরার দেশে। তপা দা’কে সমাহিতও করা হয়েছে তার প্রিয় ভালোবাসার শহর বরিশালেই। তাইতো শেষ লাইনে এসে বলতে হচ্ছে দাদা শুধু ভালোবেসেই গেলেন পেলেন না কিছুই।

হয়তো তপা দাদা মৃত্যুর আগের মুহুর্তেও অপেক্ষায় ছিলেন সেই প্রাণ প্রিয়সীর! আশ্চর্য ভালোবাসা,অবাক করা ভালোবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত সকলের প্রিয় তপা দাদার। ভালো থাকবেন পরপারে। ঘুরে দেখা শহরে মনের মানুষের দেখা না মিললেও ওখানে যেন গভীর ভালোবাসার সৃষ্টি হয় এই প্রত্যাশায় মো. সুজন মোল্লা,সাধারণ সম্পাদক বানারীপাড়া প্রেসক্লাব

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com